Posts

Showing posts from December, 2020

হারিয়ে যাওয়া রামাবতী নগরী: কিছু কথা

Image
কৈবর্ত বিদ্রোহ - দোদুল্যমান পাল সাম্রাজ্যের উপর সবচেয়ে বড় আঘাত, যা পালরাজদের বিতাড়িত করে বরেন্দ্র থেকে। দিব্ব্যোক - রুদোক - ভীম বরেন্দ্রকে পালদের হস্তচ্যুত করে রাখে ১১/১২ বছর। অবশেষে পালদের ভাগ্যলক্ষ্মী ফিরলো রামপাল ও তাঁর আঠারো রথীমহারথীর হাত ধরেই। ফলশ্রুতিতে ভীম পরাস্ত ও নিহত এবং বরেন্দ্র পালদের করায়ত্ত। সেই সাথে পাল সাম্রাজ্য নিভতে বসা প্রদীপের মত শেষবার জ্বলে উঠলো উজ্জ্বলভাবে। রামপাল বরেন্দ্র পুনরুদ্ধার করে মনোযোগ দিলেন শাসন সুসংহত করতে আর জনগণের মন জয় করতে। স্থাপন করলেন নতুন রাজধানী রামাবতী এবং গৌরববর্ধন করলেন জগদ্দল মহাবিহারের। মনে প্রশ্ন জাগে, বরেন্দ্রের প্রতি রামপালের এই টান ও ভালোবাসা কি কেবলই পিতৃভূমি বলে? নাকি রাজনৈতিক ও কুটনৈতিক কারণও বিদ্যমান? আমার দৃঢ় বিশ্বাস, দ্বিতীয় কারণটাই মুখ্য ও প্রথমটি গৌণ।  (জগদ্দল মহাবিহারের মূল ঢিবির পাশের অনাবিষ্কৃত ঢিবি) বরেন্দ্র তো স্বর্ণপ্রসবিনী - শস্য সম্পদের প্রাচুর্য তো সেই সুপ্রাচীন কাল থেকেই। আবার কামরূপ তো বরেন্দ্র থেকে হাতের নাগালে - এটাও কিন্তু উপেক্ষণীয় নয়। মহীপাল ও অন্যান্য পাল রাজারা বারংবার কামরূপ জয় করেছেন বলেই জানা যায়। খোদ রাম

ছবির ইতিহাস, ইতিহাসের ছবি (১ম পর্ব)

Image
হঠাৎ পাওয়া.....  শংকরের " কত অজানারে " উপন্যাসের ভূমিকায় লেখক লিখেছেন: "এক পরম পূণ্য লগ্নে টেম্পল চেম্বারে এসেছিলাম। দেখতে পেয়েছি জীবনের এক মহা ঐশ্বর্যময় দিক। কোনো পরিশ্রম, কোনো অনুসন্ধান না করে আকস্মিক গুপ্তধনের সন্ধান পেয়েছি। আচমকা হোঁচট খেয়ে চেয়ে দেখলাম, পায়ের কাছে কলসী বোঝাই মোহর।" এমনি করে আমিও দেখা পেয়েছিলাম ছবির বাড়িটিকে। ২০১৮ সালে মহাস্থান ভ্রমণের সময় ভাসু বিহার দেখব বলে বেরিয়েছিলাম। দুপুরের রোদ মাথায় করে বিহার গ্রাম বাজারে পৌঁছাতেই চোখ আটকে গেলো বাজারের উপরে দাঁড়িয়ে থাকা সুবিশাল বাড়িটিতে। নেমে পড়লাম দেখবো বলে। বাড়িটার নাম লেখা "বিলাস ভবন", ১৯৪২ সালে স্থাপিত।  বাজারের এক দোকানদারকে প্রশ্ন করতে জানতে পারলাম কোন এক ধনী হিন্দু পরিবারের বাড়ি ছিলো এটি। ১৯৪৭ এর দেশভাগের ডামাডোলে ভারতে চলে গেছে কত স্বপ্ন দিয়ে গড়া বাড়িটি রেখে। সেই কবেই সে পরিবারের স্মৃতি ধূলায় ঢেকে গেছে। শুধু আছে অজানা কত গল্প-কথা, হাসি-কান্না আর একটা দীর্ঘশ্বাস! কে তার খোঁজ রাখে..... কত অজানারে!

হলুদ বিহার: বিলুপ্তির দ্বারপ্রান্তে

Image
বাংলাদেশের নওগাঁ জেলার বদলগাছী উপজেলার অন্তর্গত বিলাসবাড়ি ইউনিয়নের হলুদ বিহার গ্রামে সোমপুর মহাবিহার (পাহাড়পুর) এর সমসাময়িক হলুদ বিহার অবস্থিত। মজার বিষয় হল, যে স্থানে হলুদ বিহারের ধ্বংসাবশেষ অবস্থিত সে জায়গার আরেকটি নাম দ্বীপগঞ্জ, যেটি একটি গ্রাম্য হাট। হলুদ বিহারের অবস্থান সোমপুর মহাবিহার (পাহাড়পুর) থেকে ১৫ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং পুন্ড্রবর্ধন (মহাস্থানগড়) থেকে ৫০ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে। প্রতীয়মান হয় হলুদ বিহার সোমপুর মহাবিহার, ভাসু বিহার ও মহাস্থানগড়ের সাথে সড়কপথে যুক্ত ছিলো। হলুদ বিহার থেকে ৫ - ৬ কিলোমিটার যথাক্রমে পূর্ব ও পশ্চিম দিয়ে বয়ে চলেছে তুলসীগঙ্গা ও ছোট যমুনা নদী। সমস্ত হলুদ বিহার গ্রামটিতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে প্রাচীন স্থাপনার চিহ্নবিশেষ, ইটের টুকরো ও খোলামকুচি। স্থানীয় জনগণ হলুদ বিহার রাজা হলধর ও সোনাভানের লোককাহিনীর সাথে সম্পর্কিত বলে মনে করে। (হলুদ বিহার ঢিবি) হলুদ বিহার সম্পর্কে অক্ষয়কুমার মৈত্র মত প্রকাশ করেছেন:  "পাহাড়পুরের আড়াই ক্রোশ দক্ষিণে এইরূপ একটি বিহারের ধবংসাবশেষ আবিষ্কৃত হইয়াছে; তাহা এখনও “হলুদ-বিহার” নামে পরিচিত। পাহাড়পুরের আধুনিক নিরক্ষর অধিবাসিবর্গ