Posts

Showing posts from June, 2024

একটু খেজুরে আলাপ

Image
সৈয়দ মুজতবা আলীর "রসগোল্লা" গল্পটি তো সবাই পড়েছেন। ইতালির ভেনিস বন্দরে চুঙ্গিওলার নাকে রসগোল্লা থেবড়ে দেওয়া এবং অতঃপর রসগোল্লার জাদুতে সবাই বিভোর হয়ে যাওয়ার গল্পটি আমাদের এখনো হাসায়। সেই সঙ্গে বাঙালি হিসেবে রসগোল্লা নিয়ে গর্ববোধ হয়, বিশেষত আমার মতো মিষ্টান্ন প্রেমিকদের জন্য। রসগোল্লার পাশাপাশি আর যে মিষ্টিগুলো আমাকে বেশি টানে, খেজুর গুড়ের জিলাপি তার মধ্যে অগ্রগণ্য। পুণ্ড্র-বরেন্দ্রীতে যখন শীত নামতে শুরু করে, সেসময় এই জিলাপি যেন অমৃত সমান। আহা, খেজুর গুড়ের জিলাপির প্যাঁচে যেন আটকে পড়েও সুখ।  খেজুরের জিলাপি পুণ্ড্রে শীত নামতে শুরু করলে গুড়ের জিলাপির চাহিদা বাড়তে থাকে। রসে ভরা প্যাঁচওয়ালা বস্তুটির যেন একটা সম্মোহনী ক্ষমতা আছে; আমার মতো মিষ্টান্ন প্রিয় মানুষের অন্তত সে কথাই মনে হয়। সে ভাবনা থেকে একদিন খেয়াল হলো, খেজুর গুড় নিয়ে কিছু সুলুকসন্ধান করা দরকার, যে গুড়ের মহিমায় জিলাপির প্যাঁচে পড়েও খুশি আমি। এই খেজুরে আলাপ সে কারণেই করছি।  পুণ্ড্রের আখ ঐতিহাসিকভাবে বিখ্যাত একথা আমরা জানি। অতি প্রাচীন এ অঞ্চলের বাসিন্দা পুণ্ড্রগণ আখচাষে ছিলেন সিদ্ধহস্ত। পুণ্ড্রে উৎপাদিত বিপুল পরিমাণ আখের

জয়পুরহাট জেলার ইতিহাস

Image
বরেন্দ্রীর বুকে ছোট্ট একটি জেলা, আমাদের প্রাণের জেলা জয়পুরহাট। মানুষ মাত্রই তার জন্মস্থানের প্রতি একটি আলাদা ভালোবাসা থাকে, যাকে নাড়ির টান বলি আমরা। আমি যেখানেই যাই, লালমাটি চোখে পড়লে মনে পড়ে যায় জয়পুরহাটের মাটি; বরেন্দ্রীর মাটির বিশেষত্ব যে লাল রং। ভূতাত্ত্বিকগণ বলেন, প্লাইস্টোসিন যুগে, মানে আজ থেকে ২.৫৮ মিলিয়ন থেকে ১১,৭০০ বছর আগে যে সকল ভূমি বা অঞ্চল সমুদ্রতল থেকে উত্থিত হয়েছিল, আমাদের বরেন্দ্রী তার মধ্যে একটি। তার মানে, সমগ্র বাংলার প্রাচীন ভূমি ও জনপদগুলোর মধ্যে আমাদের জয়পুরহাট ও আশেপাশের অঞ্চল অন্যতম। লালরঙের মাটি আর ভূগর্ভস্থ কয়লা ও চুনাপাথরের ভাণ্ডার এ এলাকার প্রাচীনত্বের সাক্ষ্য দেয়। ঠিক কবে এ অঞ্চলে মানববসতি গড়ে ওঠে তা বলা কঠিন, যেহেতু এখানে প্রাগৈতিহাসিক সময়ের কোন পুরাতাত্ত্বিক নিদর্শন পাওয়া যায় নি। এর একটি কারণ হতে পারে, একই জায়গায় বারবার বসতি স্থাপিত হয়েছে; যার ফলে বেশি প্রাচীন সময়ের নিদর্শন পাওয়া যায় না। তবে প্রাচীন গ্রন্থাবলী থেকে আমরা এ জনপদের নাম পাই পুণ্ড্র বা পৌণ্ড্র বা পৌণ্ড্রবর্ধন হিসেবে, আমরা আলোচনার সুবিধার্থে কেবল পুণ্ড্র নামটি ব্যবহার করবো এখানে। পুণ্ড্রের ভৌগো